৩০ বছর পর রাবির লোক প্রশাসনের পুনর্মিলনী,আবেগ-উচ্ছাসে স্মৃতির রোমন্থন
রাজশাহী প্রতিনিধি : ৩০ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) লোক প্রশাসন বিভাগের প্রথম পুনর্মিলনীতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় হৈ-হুল্লোড় আর আড্ডায় মেতে উঠেছেন বিভাগটির প্রাক্তন-বর্তমান শিক্ষার্থীরা।পুরোনো স্মৃতি ফিরে পেয়ে আবেগ-আপ্লুত হয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরতেও দেখা যায় শিক্ষার্থীদেরকে।
‘লোক প্রশাসন অ্যালামনাই এসোসিয়েশন’ (রুপার) আয়োজনে এ পুনর্মিলনীতে অংশ নিতে পাড়ি জমিয়েছে বিভাগের প্রায় সাত শতাধিক শিক্ষার্থী।
শনিবার (১৮মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে পুনর্মিলনীর উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম।
‘লোক প্রশাসন অ্যালামনাই এসোসিয়েশন’ (রুপা) সভাপতি ও বিভাগের অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ উপাচার্যদ্বয় অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক ও লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নূরুল মোমেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,পুনর্মিলনীকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবন ও লোক প্রশাসন বিভাগের ভেতর ও বাইরে ব্যানার ফেস্টুন এবং বর্ণিল আলোক সাজে সজ্জিত করা হয়েছে।তাত্ত্বিক পঠনপাঠনকে শিক্ষা উপকরণের মধ্য দিয়ে বাস্তবে রুপ দিয়ে বিভাগকে সজ্জিত করা হয়েছে।
পরে বিভাগটির সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি বের হয়।র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বর, রবীন্দ্র ভবন, প্যারিস রোড, প্রশাসন ভবনসহ প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে মিলিত হোন তারা।এরপরে শুরু হয় আলোচনা সভা।
অনুষ্ঠান অংশ নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে ৫ম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী মো. হাবিব উল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন পর আমাদের লোক প্রশাসন বিভাগের প্রথম পুনর্মিলনীতে এসে খুবই ভালো লাগছে। বিভাগের সিনিয়র ভাই ও আপুদেরকে পেয়ে এবং জুনিয়রদের সাথে মিলিত হতে পেরে যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি হচ্ছে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক।ভালোবাসার এই বন্ধন (বিভাগ) এভাবেই আমাদেরকে আজীবন কাছে রাখবে।দুই দিনব্যাপি এই অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে সম্পন্ন হোক সেই প্রত্যাশা এই সাবেক রাবিয়ানের।
অ্যালামনাই এসোসিয়েশন'র সভাপতি অধ্যাপক ড. প্রণব কুমার পান্ডে বলেন,অ্যালামনাই এসোসিয়েশন শিক্ষা ব্যবস্থার একটি অংশ হয়ে দাড়িয়েছে।২০১৯ সালে বিভাগে অনুষ্ঠিত রজতজয়ন্তী উৎযাপন অনুষ্ঠানে আমরা একটি অ্যালামনাই কমিটি গঠন করি।বর্তমানে এ সংগঠনের নিবন্ধিত সদস্য সংখ্যা প্রায় চার শতাধিক।নিবন্ধিত সদস্যদের নিকট থেকে প্রাপ্ত ফি বাবদ ১০ লক্ষ টাকা আমরা ব্যংকে রেখেছি যা থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ দিয়ে বিভাগের অধ্যায়নরত অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ চালু করা হবে।প্রাক্তন-বর্তমান সবাইকে অ্যালামনাইয়ে পেয়ে আমার কাছেও খুব ভালো লাগছে।
তার অনুভুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি লোক প্রশাসন বিভাগের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলাম।আমার ব্যাচ ছাড়া সবাই জুনিয়র এবং আমার ছাত্র।সবাই আমাকে আপনি করে বলছে এটাই ভালো লাগা।রাতে আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে যেখানে শিরোনামহীন ব্যান্ড থাকবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে এ আয়োজন উপভোগ করার আহ্বান জানান তিনি।
অ্যালামনাই এসোসিয়েশন’র সাধারণ সম্পাদক ও বিভাগটির সভাপতি নূরুল মোমেন বলেন, অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে ও সুষ্ঠুভাবে এ আয়োজনটি সম্পন্ন করতে পেরেছি।চেষ্টা করেছি সবার চাওয়া পাওয়াগুলো পূরণ করার। অনুষ্ঠানটি সফল করতে যারা সময় ও শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
তিনি আরও বলেন, পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের প্রাণ হলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।আপনারা দূরদূরান্ত থেকে এসে এই অনুষ্ঠানটি যেভাবে প্রাণবন্ত করেছেন তাতে আমি ধন্য।পাশাপাশি বিভাগের বর্তমান শিক্ষার্থীরা তাদের সিনিয়রদের বরন করে নেয়ার জন্য যে উদ্দীপনা দেখিয়েছে তাতে আমি অভিভূত।এসময় তিনি বিভাগের প্রথম পুনর্মিলনী আয়োজনে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এদিকে লোক প্রশাসন বিভাগের প্রথম পূনর্মিলনীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ক্যাম্পাস
মাতায় শিরোনামহীন ব্যান্ড।(১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল চত্বরে গান পরিবেশন করে এ ব্যান্ডের সদস্যরা।
এছাড়াও দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে ছিল উন্মুক্ত আড্ডা,অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা ও কমিটি গঠন,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, র্যাফেল ড্র সহ থাকছে ফটোসেশানের আয়োজন।
What's Your Reaction?