সাংবাদিককে রেল কর্মকর্তার হুমকির প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ
রাজশাহী প্রতিনিধি : বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমের ধারাবাহিক অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের চরিত্র নিয়ে বাজে মন্তব্য ও সংবাদ প্রকাশকারি সাংবাদিকদের হুমকির প্রতিবাদে ঐ রেলওয়ে কর্মকর্তাকে ক্ষমা চাইতে ২৪ ঘন্টার সময় বেঁধে দেয় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ।কিন্তু ২৪ ঘন্টা পার হলেও ঐ কর্মকর্তা ক্ষমা না চেয়ে উল্টো সাংবাদিকদের ফাঁসাতে নানা কারসাজি ও মিথ্যা প্রচারণা করে চলেছেন।
অবশেষে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ।এছাড়াও ঐ কর্মকর্তা নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দিবেন বলে হুশিয়ার করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, পশ্চিমাঞ্চল রেলের নানা অনিয়ম দুর্নীতির ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের অংশ হিসেবে গত ১২ মার্চ ২৩ তারিখে রেলওয়ের সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এও) মোঃ বেলাল উদ্দিন ও সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (সিওএস) এস এম রাসেদ ইবনে আকবরের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করা হয়।যার শিরোনাম হয়, "হিন্দু কর্মকর্তারা "র" এজেন্টের লোক, বললেন পশ্চিম রেলের এ.ও বেলাল"।আবার কিছু পত্রিকায় শিরোনাম হয় "কোনভাবেই থামছেনা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দুর্নীতি"।তবে এসকল সংবাদের তথ্য প্রমান সাংবাদিকদের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে।
এই সংবাদ প্রকাশের পর থেকে সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক রাসেদ আকবর কিছু কথিত সাংবাদিকের প্ররোচনায় প্রতিবাদের নামে পত্রিকা অফিস গুলোতে ইমেইলের মাধ্যমে হুমকি প্রদান করেন।এছাড়াও ঐ প্রতিবাদ পত্রে রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় দৈনিক গণকন্ঠ পত্রিকার ষ্টাফ রিপোর্টার রেজাউল করিম'কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।এরপর রাসেদ আকবরকে ক্ষমা চাইতে ২৪ ঘন্টার সময় বেঁধে দেয় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব।
ব্যাপারটি নিয়ে রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি মিডিয়া ও ডিএফপি তালিকাভুক্ত সুনামধন্য পত্রিকা দৈনিক গণকন্ঠ পত্রিকার ষ্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করি।যেখানে আমাকে বেতন সাপেক্ষ্যে নিয়োগপত্র প্রদান করেছে পত্রিকা অফিস।অথচ দপ্তরটির সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক রাসেদ আকবর আমাকে খুব কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।যার প্রেক্ষিতে আমার ক্লাব এর প্রতিবাদ করেছে এবং করবে।এতে যদি কাজ না হয় তাহলে আমি আদালতে মানহানীর মামলা করবো।তবে বিষয়টি নিয়ে কোনোভাবেই ছাড় দিতে নারাজ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু কাউসার মাখন।তিনি বৃহত্তর আন্দোলনসহ ও মানববন্ধনের আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, এর পেছনে কারা কারা আছেন আর রেলওয়ে থেকে কে কে সুবিধা নিয়ে থাকেন আমরা তাদের মুখোশ উন্মোচন করবে।শুধু অপেক্ষার পালা।
তবে এসকল ঘটনার বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সিওএস এসএম রাসেদ ইবনে আকবরকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বললে জেনারেল ম্যানেজার (পশ্চিমাঞ্চল রেল) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, অভিযোগটি মহাপরিচালক বরাবর করা হয়েছে।মাধ্যম আমাকে করা হয়েছে।আমি তা ফরোয়ার্ড করে দিবো।আভ্যন্তরীণ অনেক বিষয় আছে তা বললে অনেক কিছুই বেড়িয়ে আসবে।এখন সরাঞ্জামে তেমন কাজ নেই।৭ মাসে তিনি ২০ টির মতো কাজ করেছেন।এখনো আমি তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি।সোমবারে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানবো আসলে বিষয়টি কি?
প্রসঙ্গত, এর আগেও রেলওয়ে মেডিকেলের নানা অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।তা একজন কর্মকর্তার নির্দেশে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।তদন্তের নামে এখনো ফাইল আছে হিমাগারে।পশ্চিমের কর্তাবাবু কমিশন বানিজ্যের ভাগ পান বলে এখনও অটল রয়েছেন সকল দূর্নীতির সঙ্গে।তবে এর আগে কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির কারনে পূর্বের সিওএস বেলাল সরকার ও এসিওএস কাউসার বরখাস্ত হয়েছেন।তাদের বিরুদ্ধে দুদকে মামলাও চলমান।সেই দুর্নীতির ধারা এখনো অব্যাহত রাখা হয়েছে।দীর্ঘদিন যাবৎ সেখানে কর্মরত এও বেলাল, সানোয়ার, রিদয়সহ অনেকেই গড়েছেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।সেই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলছেন সিওএস রাসেদ আকবর।এই চেয়ারে যে যখন আসেন, তখন সে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নানা অনিয়ম দূর্নীতিতে জড়িয়ে যান।
সুত্র বলছে এই সিন্ডিকেট কারিগর প্রশাসনিক কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন।এই বেলাল উদ্দিন নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ করেছেন।নগরীর সিটি হাটে করেছেন বিলাসবহুল বাড়ি।গ্রামেও করেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ।বেলাল উদ্দিন জামায়াত-শিবির রাজনীতির কঠোরপন্থিক সর্মথক।সে রেলে কর্মরত হিন্দু অফিসারদের "র" এর এজেন্ট বলে আখ্যা দিয়েছেন।হিন্দু অফিসাররাই রেল নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে জানান তিনি।
বেলাল উদ্দিন জামায়াত সমর্থিত উপশহরের এক ইলেকট্রনিক পন্য ব্যবসায়ী পরিবারের সঙ্গে ঠিকাদারি ব্যবসায় লিপ্ত হয়েছেন।সেই ব্যবসায়ী পরিবার দীর্ঘদিন ধরে চোরাই মালামাল ক্রয় বিক্রির সঙ্গে জড়িত।তারা ঢাকায় একটি কারখানা তৈরি করে সেখান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির নকল পন্য তৈরি করে সাপ্লাই দিয়ে থাকেন।তবে এসকল তথ্যের বিবরণ আগামী পর্বে তুলে ধরা হবে।
What's Your Reaction?