যাকেই মনোনয়ন দিই, তাকেই জয়ী করবেন
বিশেষ বর্ধিত সভায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা
# ‘সাইজে’র রাজনীতি বন্ধ করতে বললেন তৃণমূলের নেতারা
# প্রতিটি আসন আবারও শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি
# তৃণমূলে সংগঠনের কাজে মহিলাদের সম্পৃক্ততা দাবি
# তৃণমূলের কথা শোনেন না এমপিরা
দলীয় কোন্দল, নিজেদের মধ্যে রেষারেষি আর তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে সংসদ সদস্যদের দূরত্বের কথা উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায়। নিজে মনোনয়ন না পেলে দলীয় প্রার্থীকে হারানোর প্রবণতার কথাও বলেছেন তৃণমূলের নেতারা। নিজে হলে ভালো, অপর হলেই খারাপ– এমন প্রবণতা নিয়ে যারা দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে সভায়। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা যাকেই মনোনয়ন দিই, ভালো-মন্দ, কানা-খোঁড়া যাই হোক, আপনাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে তাকেই জয়ী করবেন।’
বিশেষ সভায় অংশ নেওয়া একাধিক নেতা গণমাধ্যমকে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রোববার (৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার পর ‘শত সংগ্রামে অজস্র গৌরবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে’ শীর্ষক আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় দীর্ঘদিনের জমে থাকা দুঃখ-কষ্টের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানান তৃণমূলের নেতারা। দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনাও তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। তিনি আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ের ব্যাপারে নেতাদের বিভিন্ন দিকনিদের্শনা দেন।
সকাল ৯টা থেকে তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা গণভবনে প্রবেশ শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টার কিছু পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মঞ্চে আসেন। সভার শুরুতে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ।
দলের নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সূচনা বক্তব্য রাখার পর তৃণমূলের নেতাদের কথা শোনেন কেন্দ্রীয় নেতারা। আট বিভাগের প্রতিটি থেকে একাধিক জেলা ও উপজেলার নেতারা বক্তব্য দেওয়া সুযোগ পান। পরে সভার সমাপনী বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী বক্তব্যের পর তৃণমূলের নেতারা বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা নিজ নিজ সাংগঠনিক জেলার নানা সমস্যা তুলে ধরেন। তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যের বড় অংশজুড়েই ছিল গত সাড়ে ১৪ বছরে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যাপক প্রশংসা। তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে নিজ নিজ জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হওয়ার গল্প। নেতাদের কেউ কেউ আবার তাদের বক্তব্যে নিজেদের জেলার উন্নয়নে কিছু দাবিও তুলে ধরেন। আগামী নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসাদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়ারও দাবি তোলেন তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ।
তৃণমূলের নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘মনোনয়ন যাকেই দিই। আমি কিন্তু ঘরে বসে থাকি না, সারাদিন কাজ করি, সংগঠনের কাজও করি। কোথায় কার কী অবস্থা সেটা কিন্তু ছয় মাস পরপর জরিপ করি। আমাদের এমপিদের কী অবস্থা, অন্য জনপ্রতিনিধিদের কী অবস্থা তার একটা হিসাব নেওয়ার চেষ্টা করি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর নির্ভর করছে আমাদের ক্ষমতায় যাওয়া বা না যাওয়া। সে কথাটা মাথায় রেখে, আমাদের উপরে ভরসা রাখতে হবে। আমরা যখন মনোনয়ন দেব, অবশ্যই আমাদের একটা হিসাব থাকবে যে কাকে দিলে আমরা আসনটা পাব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক এসএমএস দিলে, গিবত গাইলেই আমি তাদের কথা শুনব, এমন নয়। এটা আমি স্পষ্ট বলে দিচ্ছি। কারণ, আমার নিজের হিসাব-নিকাশ আছে। ৪২ বছর আপনাদের সঙ্গে আছি। ১৯৮১ সালে সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। এরপর কিন্তু আমি প্রতিটি এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখেছি। ফলে আমার কিন্তু ধারণা আছে। কার অবস্থা কী সেটা বুঝেই কিন্তু আমরা মনোনয়ন দিই।’
দলীয় নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল সম্পর্কে কড়া বার্তা দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। দলে ভিন্নমতাবলম্বীদের কোনো জায়গা থাকবে না বলে স্পষ্ট সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
দলের নেতারা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি, বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধি দলের বক্তব্য এবং বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তৃণমূল নেতাদের মনোবল বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
এদিকে বৈঠকের দ্বিতীয় পর্বের শুরুতে গণমাধ্যমকর্মীদের অনুষ্ঠানস্থল ছাড়ার অনুরোধ জানানো হয়।
ওই পর্বে উপস্থিত থাকা একাধিক নেতা জানান, দ্বিতীয় পর্বের বৈঠকে তৃণমূলের নেতারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন এমপির কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেন। তারা বলেন, পক্ষপাতপূর্ণভাবে টিআর-কাবিখা দিয়ে অনেক এমপি এলাকায় বদনাম করছেন এবং তারা ‘মাই লীগ’ তৈরি করেছেন। শেখ হাসিনার মনোনয়ন পেয়ে অনেকে শেখ হাসিনার চেয়ে নিজেকে জনপ্রিয় মনে করেন বলেও মন্তব্য করেছেন তৃণমূলের অন্তত দুজন নেতা। তাদের একজন বলেছেন, তারা এলাকায় গিয়ে আওয়ামী লীগ করে না, করে মাই লীগ।
তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ অভিযোগ করেন, কিছু কিছু এমপি টিআর-কাবিখা নিয়ে অনিয়ম করেন, দুর্নীতি করেন। টাকা খেয়ে কোনো কোনো এমপি বিএনপি-জামায়াতের জন্য চাকরির সুপারিশ করেন। ফলে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। তৃণমূলের একাধিক নেতা আওয়ামী লীগের অন্তর্কলহ এবং বিভক্তির জন্য এমপিদের ভূমিকাকে দায়ী করেছেন। এমপিরা এলাকায় আওয়ামী লীগের কাজ করেন না, বরং তাদের নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করেন এবং এ বলয়ের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে চান।
বিভিন্ন নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে তৃণমূলের একাধিক নেতা বলেছেন, এসব নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি যাদের মনোনয়ন দিয়েছেন তাদের বাদ দিয়ে এমপিরা তার নিজের পছন্দের ব্যক্তির পক্ষে কাজ করেছেন এবং তাকে জয়ী করার জন্য সহায়তা করেছেন। এর ফলে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। এসব এমপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের নেতারা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতিকে আহ্বান জানান।
সভায় পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন, জেলার সব উপজেলায় সাংগঠনিক অবস্থা ভালো আছে। কিন্তু বাউফল উপজেলায় অনেকদিন যাবত বিরোধ চলছে। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপিংয়ের কারণে প্রায়ই সেখানে মারামারির মতো ঘটনা ঘটছে। নির্বাচনের আগেই এ সমস্যা সমাধানে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
পটুয়াখালীর উন্নয়নের কথা তুলে ধরে কাজী আলমগীর বলেন, পটুয়াখালী এখন আর খালি নেই। পটুয়াখালী এখন ভরপুর। সাড়ে ১৪ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু হওয়ার পর কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রে এখন দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে সমুদ্র সৈকতটি ভাঙনের মুখে। এটি রক্ষায় একটা শক্তিশালী বেড়িবাঁধ দরকার। আগামী নির্বাচনে পটুয়াখালীর সবগুলো আসনে নৌকার বিজয় উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এ নেতা। এসময় বর্ধিত সভায় উপস্থিত বাউফলের কয়েকজন নেতা এর মৃদু প্রতিবাদ জানান। তারা বক্তব্যর মধ্যেই উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকেন। তখন জেলা সভাপতি তাদেরকে শেখ হাসিনার উপস্থিতিতেই ধমক দিয়ে বলেন, এই তোমরা কথা বলছ কেন। দেখছ না এখানে আমি কথা বলছি। এতে কিছুক্ষণের জন্য মৃদু হট্টগোল হয়।
এরপরই বক্তব্য রাখেন বরগুনার আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি-উল কবির। তিনি বলেন, নৌকার সঙ্গে যারা প্রতারণা করে তাদের সমমর্যাদা দেওয়া হয়। এতে দল সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে নৌকা জয়যুক্ত হবে বলে প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
পঞ্চগড় জেলায় ব্যাপক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে চারটি দেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানি ও ইমিগ্রেশন চালু হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ ব্যাপক উপকৃত হয়েছে। চা বাগান জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন এনেছে। পঞ্চগড় এখন ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত জেলা। সাধারণ মানুষ তো প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর উপহার পেয়েছেন। বিএনপির অসচ্ছল নেতাকর্মীদের প্রতিও কোনো অবিচার করা হয়নি। শেখ হাসিনার উদারতায় তারাও ঘর পেয়েছেন।
একজন বিএনপি নেতার বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, উপকারভোগী বিএনপি নেতারাও ব্যক্তিগত আলাপে বলেন, দেশ চালানোর জন্য শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। তাদের যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, বিএনপি নেতারা কেন সরকার ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে, সমালোচনা করে, তারা তখন জবাব দেয়, মঞ্চে উঠে বক্তৃতা করে মাইকে সরকারের সমালোচনা আর বিপক্ষে না বললে বিএনপির তো রাজনীতি থাকে না। বিএনপির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। তাই বিএনপির নেতারা সরকারকে গালিগালাজ করেন। তবে উপকারভোগী বিএনপি নেতাকর্মীরা আগামীতে নৌকায় ভোট দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন– বলেন সম্রাট।
আগামী নির্বাচনেও ঐক্যবদ্ধভাবে পঞ্চগড়ের দুটি আসনে নৌকার বিজয় উপহার দেওয়ার কথা বলেন তিনি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়নের কারণেই আগামীতে মানুষ ব্যাপকভাবে আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।
বর্ধিত সভায় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান বলেন, আপনি আজ পর্যন্ত ৫৮ লাখ এক হাজার বয়স্ক ভাতা দিয়েছেন, ২৫ লাখ ৯৮ হাজার বিধবা ভাতা দিয়েছেন, আপনি প্রতিবন্ধীদের ভাতা দিয়েছেন ২৯ লাখ ১৫ হাজার। বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি আমাদের এলাকায় কে কে ভাতা পেয়েছেন? আমরা বলতে পারি না। আবার হয় তো কেউ স্বীকার করবে না। একটা ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে প্রত্যেক নেতার কাছে কারা ভাতা পেয়েছে সেই তালিকা পৌঁছে দিতে হবে। যাতে করে ভোটের সময় তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলতে পারেন, তোমরা তো এই ভাতা পেয়েছ, তার কল্যাণে পেয়েছ, কার কারণে পেয়েছ? মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কারণে পেয়েছ। আগামী নির্বাচনে তো নৌকা মার্কায় ভোট দিলে তোমাদের ভাতা আরও বৃদ্ধি হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি হলে ভালো, অপরে হলে খারাপ– এই রাজনীতি চলছে। এই সাইজ করার রাজনীতি চলছে। আমরা অনেকেই এই সাইজ করার রাজনীতি করি। এই সাইজ করার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এ অবস্থা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। দলীয় সভাপতির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি যাকে মনোনয়ন দেবেন, ইউনিয়ন পরিষদ হোক, সিটি কর্পোরেশন হোক, তিনি যদি নির্বাচিত হয়ে আমার চেয়ে জনপ্রিয় হয়ে যায়, সেজন্য তার মাথাটা এখান থেকে কেটে দিতে হবে, এগুলো যারা করে আপনি জানেন, তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দলকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। এখানে যারা আছে তারা যদি বলে যে যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করবে, তাহলে আগামীতে আওয়ামী লীগের বিকল্প আওয়ামী লীগ হবে।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা তার বক্তব্যে বলেন, খালেদা জিয়ার বেড়ে ওঠা দিনাজপুরে। ফলে বিএনপি সেখানে কিছু ভোট পেত। গত সাড়ে ১৪ বছরে জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় সেখানে বিএনপির ভোট এখন অনেক অনেক কমে গেছে। আওয়ামী লীগের ভোট বেড়েছে কয়েকগুণ। দিনাজপুর জেলা সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী বলেও উল্লেখ করেন তিনি। দিনাজপুরের একজন সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ করেন আলতাফুজ্জামান মিতা। ওই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা না মানার অভিযোগ করেন তিনি। আগামী নির্বাচনে দিনাজপুরের ছয়টি আসনেই নৌকার বিজয় উপহার দেওয়ার কথা জানান এ নেতা।
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার দাস আগামীতে প্রার্থী চূড়ান্তে জনপ্রিয়দের অগ্রাধিকার দেওয়ার অনুরোধ জানান। নির্বাচনের আগেই জেলার সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
সভা সূত্রমতে, দলের বিশেষ বর্ধিত সভা থেকে ভারপ্রাপ্ত নেতাদের ভারমুক্ত করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজ থেকে সব ভারমুক্ত। তবে কোন পর্যায়ের নেতারা সেটা তিনি উল্লেখ করেননি।
আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় আরও যারা বক্তব্য রাখেন তাদের তালিকায় রয়েছেন– পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, কলমাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, কুমিল্লা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সিলেট জেলা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, নেত্রকোণা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী জেলার মতিহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রমুখ।
বিশেষ বর্ধিত সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, জেলা ও মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌর (জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা) আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় সংসদের দলীয় সদস্য, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যান, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার দলীয় মেয়র এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। সারাদেশ থেকে প্রায় তিন হাজার নেতা ও জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
What's Your Reaction?