বগুড়া-৪ আসনে মাঠে নেমেছেন আ’লীগ নেতা রানা
নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা বিজয়ের টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
বিগত সময়ের চেয়ে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত রয়েছে। এক সময়ের বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিলো এই নির্বাচনী এলাকা। এবার নৌকার পালে হাওয়া লেগেছে। সেই কারণেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি নিজেদের করে নিতে মাঠে নেমেছেন পরিশ্রমী তরুণ রাজনীতিবিদ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নন্দীগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আনোয়ার হোসেন রানা বিভিন্ন পদে থেকে সফলভাবে দায়িত্বপালন করে আসছে। তার নেতৃত্বে গত কয়েক বছরে এই উপজেলায় সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ যেমন শক্তিশালী তেমনি ভোটাররাও আগ্রহী হয়েছে নৌকার প্রতি।
যে কারণে দুই উপজেলায় আওয়ামী লীগের কর্মিসভাগুলো জনসভায় পরিণত হয়। তরুণ যুবকদের পাশাপাশি নারীদের মাঝেও বেড়েছে নৌকার কদর। ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী খালেদা জিয়া সরকার বিরোধী আন্দোলনে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্বপালন করেন আনোয়ার হোসেন রানা। এরপরে প্রথমে ২০০২ সালে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক, ২০০৪ সালে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক, ২০০৬ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, ২০১২ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ২০২০ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেন তিনি। এছাড়াও ২০১৬ সালে জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে আনোয়ার হোসেন রানা শতভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। ২০২২ সালে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচিত হন।
কাহালু উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়ন এবং নন্দীগ্রাম উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বগুড়া-৪ আসন। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মমতাজ উদ্দিনকে বগুড়া-৪ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিলো। পরে মহাজোটের কারণে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়। বিএনপি ভোট বর্জন করায় এবং জাতীয় পার্টির দুর্বল প্রার্থী ও ভোটারদের কম উপস্থিতির কারণে সহজেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাসদ প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেন।
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মহাজোট প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেনকে হারিয়ে বিএনপি প্রার্থী মোশারফ হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহা সমাবেশ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন। তার পদত্যাগে শূন্য আসনে উপনির্বাচনে জাসদ প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেন মশাল প্রতিকে ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আশরাফুল হোসেন হিরো আলম একতারা প্রতিকে ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট পায়।
তবে এবারের প্রেক্ষাপট অনেকটা ভিন্ন। সাংগঠনিকভাবে জাসদ বা জাতীয় পার্টির অবস্থা তেমন ভালো নয়। আর বিএনপি ভোটে এলে এখানে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী প্রয়োজন বলে মনে করেন এই দুই উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীসহ সচেতন মহল। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ বা মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানার বিকল্প নেই। উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ তৃণমূল পর্যন্ত তাকেই প্রার্থী হিসেবে চায়।
সব মিলিয়ে দুই উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। দলীয় নেতাকর্মীদের তৎপরতা, সভা ও সমাবেশের কারণে সাধারণ মানুষের মাঝেও নৌকার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে বলে জানান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকুল হোসেন।
নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নন্দীগ্রাম পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান বলেন, দলীয় সংসদ সদস্য না থাকার কারণে উন্নয়ন কার্যক্রমে নেতাকর্মীরা সম্পৃক্ত হতে পারেনি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানাকে মনোনয়ন দেয়া হলে নৌকা মার্কা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। দুই উপজেলায় তরুণ ভোটারদের কাছে টানতে দলীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তরুণ ভোটাররা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নৌকা মার্কার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা বলেন, উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু আসনটি জাসদকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিলো। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেলে বগুড়া-৪ আসনটি শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
What's Your Reaction?