অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথনাটক 'মড়া'র ৩য় প্রদর্শনী আজ
সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক, নাটোর: ধর্মীয় উগ্রবাদবিরোধী, অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিস্তার ঘটানোর পথনাটক "মড়া" এর তৃতীয় প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ। বাগাতিপাড়ার পাঁকা ইউনিয়নের হাকিমপুর বাজারে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় পথনাটকটি পরিবেশন করবে বকুল স্মৃতি থিয়েটার, বাগাতিপাড়া।
এই পথনাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়েছিল বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে। এরপর গত ১১ নভেম্বর শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় বাগাতিপাড়ার জিগরী বাজারের স্কুল মাঠে এর দ্বিতীয় প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
শুভঙ্কর চক্রবর্তী রচিত পথনাটকটির নির্দেশক মসগুল হোসেন (ইতি) দৈনিক উত্তরপথকে জানান, বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সাম্প্রদায়িক ইস্যু যদিও দীর্ঘদিনের, তবুও সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে সচেতন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সেই দ্বায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এই ধরনের একটি বিষয়কে বেছে নিয়েছি আমরা।
নির্দেশক আরও জানান, নাটকটিতে অচেনা এক ব্যক্তিকে গ্রামের একটি স্থানে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে মৃত ভেবে গ্রামবাসী সৎকারের উদ্যোগ নেয়। সৎকার করতে গিয়ে ঐ ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়টি সামনে চলে আসে। অজ্ঞাত ব্যক্তি হওয়ায় তার ধর্ম পরিচয় কেউ জানতে পারেনা। হিন্দু মড়া, নাকি মুসলিম মড়া এই দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয় গ্রামবাসী। কিন্তু সৎকার করাও জরুরী হয়ে পড়ে। এই নিয়ে গ্রামের মুসলিম ও হিন্দু উগ্রবাদীরা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। গল্পের শেষ পর্যায়ে অজ্ঞাত অচেতন ব্যক্তির ঘুম ভাঙে এবং ধর্মীয় উগ্রবাদী নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের মুখের সামনে থুথু ফেলে স্থান ত্যাগ করে। এ থেকে আমরা আসলে সেই শিক্ষাই পাই যা আমাদেরকে সামাজিকভাবে অসাম্প্রদায়িক হতে শেখায়, মানুষকে মানুষ ভাবতে শেখায়।
অন্য সকল সময়ের জন্য প্রাসঙ্গিক হলেও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধর্মীয় উগ্রবাদীরা যেন সাধারণ মানুষের মাঝে গুজব ছড়িয়ে বা ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে কোন ফায়দা হাসিল করতে না পারে সেই জন্য বকুল স্মৃতি থিয়েটার পথনাটকটি নিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামের সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে প্রতি সপ্তাহে একটি করে প্রদর্শনী আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান নাটকটির নির্দেশক মশগুল হোসেন (ইতি)।
What's Your Reaction?