রাজশাহীর মতিহার থানা এলাকার হোয়াইট কালার মাদকের গড ফাদার 'অলি'
রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানা এলাকায় হোয়াইট কালার মাদকের গড ফাদার মেহেদী হাসান অলি। অর্গানাইজড ক্রাইম উইং এন্টি টেররিজম ইউনিট ঢাকা কর্তৃক একটি প্রতিবেদনে তা তদন্ত পূর্বক উল্লেখ করা হয়েছে।
গত বছর ৪ ডিসেম্বর-২০২২ ইং তারিখে মতিহার থানা এলাকার গনস্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ তদন্ত করে এন্টি টেররিজম ইউনিট ঢাকার পুলিশ পরিদর্শক আশরাফুল উক্ত প্রতিবেদন দেয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখে তিনি উক্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
অভিযুক্ত মেহেদী হাসান ওলির বাড়ি মতিহার থানা এলাকার ধরমপুর বউবাজার কাশেমের মোড়। তার বাবা'র নাম আকবর আলী৷
এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরিত উক্ত অভিযোগে বলা হয়েছে,মেহেদী হাসান ওলি ক্রসফায়ারে নিহত আলমগীর হোসেন আলোর স্থলভিত্তিক হয়েছে।সে মতিহার থানা এলাকার শীর্ষ অস্ত্র চোরাচালানকারী ও মাদকের গড ফাদার।সে একটি শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট তৈরি করে আড়াল থেকে তা নিয়ন্ত্রণ করেন।কাছাকাছি ভারত সীমান্ত হতে ফেন্সিডিল,ইয়াবা, হেরোইন সহ অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানকারীদের মুলহোতা সে।অভিযোগে তার বড় ভাই হাসিবও একজন মাদক কারবারি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অলির মাদক সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, দীপু, কসাই জনি, আইয়ুব, চর এলাকার আক্কাস, সম্রাট, বকুল, জাহাঙ্গীর, সেলিম।এদের বিরুদ্ধে মাদক মামলা রয়েছে।কিন্তু ধরা ছোয়ার বাহিরে থাকায় অলি ও তার ভাই এখনো কোনো মাদক মামলায় আসামী হয়নি।তবে অলির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে পর্নোগ্রাফি মামলাসহ চাঁদাবাজি,মারামারিসহ দুটি মামলা পাওয়া গেছে।তবে কয়েকটি জিডি পর্যালোচনা করে জানা যায়,সে মাদকের গড ফাদার ও নিয়ন্ত্রক।
অভিযোগ প্রেক্ষিতে এন্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক আশরাফুল হক তার প্রতিবেদনে অভিযোগের সততা পায়।অভিযোগের সততা পেয়ে তিনি চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে এও উল্লেখ্য আছে বিভিন্ন সময় মাদক কারবারিদের আটককারী পুলিশ সদস্যদের বাগে আনতে নানা হুমকি ধামকিসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে নামে বেনামে দরখাস্ত করান।
সাম্প্রতিক সময়ে মতিহার থানার এ এস আই শাওন উল্লেখযোগ্য মাদক ও ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার।সে তার মাদক কারবারি সিন্ডিকেট ভাঙতে অভিযান পরিচালনা করায় তার বিরুদ্ধেও নানা অপপ্রচারসহ নামে বেনামে অভিযোগ দিচ্ছেন।এ বিষয়ে এ এস আই শাওন একটি সাধারণ ডাইরীও করেছেন।
শুধু শাওন নয়,মতিহার থানার অনেক পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে জিডি করেছে।থানা পুলিশ তাঁর হয়রানি ও মিথ্যা অভিযোগে অতিষ্ঠ।
এদিকে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক মতিহার থানা এলাকার কয়েকজন ভিডিও সাক্ষাৎকার দেয় যে,অলি'র কাছে পুলিশের পোশাক ও অস্ত্র আছে।সেই পোশাক ও অস্ত্র তিনি প্রকাশে প্রদর্শন করেছেন।অনেকেই তিনি সেই পোশাক পরিহিত ছবি দিয়েছেন।কথিত আছে মাদকের বড় চালান আনা নেওয়ার পথে সে পোশাকের ব্যবহার করেন।
জানতে চাইলে মতিহার থানা'র পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন,এখন পর্যন্ত তার পুলিশের পোশাক পরিহিত ছবি আমি দেখিনি।কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।
অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কথা বললে আরএমপি পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মতিহার জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মধুসূদন রায় বলেন,এ বিষয়গুলো আপনার নিকট থেকে জানলাম।প্রমাণ দিলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আমরা মাদকের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভুমিকায় আছি।কোনো প্রকার মাদক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নাই।
কথা বললে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান ওলি বলেন,আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো সত্য নয়।পোশাকটি পুলিশের না,অস্ত্রটি খেলনা পিস্তল।
What's Your Reaction?