নাটোরে কাঠ ব্যবসায়ীকে থানায় আটকে রেখে নির্যাতনঃ ওসি সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা
বাগাতিপাড়া (নাটোর প্রতিনিধি) : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় চাঁদার দাবিতে থানায় আটকে রেখে মারধরের অভিযোগে ওসি এবং দুই উপ-পরিদর্শকসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক কাঠ ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার দুপুরে বাগাতিপাড়া আমলি আদালতে মামলাটির আবেদন করলে আদালতের বিচারক তা গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাগাতিপাড়া মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক আবদুল করিমের স্ত্রী অঞ্জনা বেগম বাৎসরিক ভাড়ায় কাঠ ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিনের কাছে দুটি পাওয়ার ট্রিলার ইজারা দেন। কিন্তু পাওয়ার ট্রিলারের বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কাঠ পরিবহনের সময় নিজাম বারবার হয়রানির শিকার হচ্ছিলেন। এক বছর পর তিনি পাওয়ার ট্রিলারটি অঞ্জনাকে ফেরত দেন এবং ১৫ হাজার বাকি রেখে সব ভাড়া পরিশোধ করে দেন।
কিন্তু গত ২২ ফেব্রুয়ারি অঞ্জনা বেগমের পক্ষ নিয়ে বাগাতিপাড়া থানার ওসিসহ অন্যান্য কর্মকর্তা নিজামকে থানায় ডেকে নিয়ে আটকে রাখেন। একপর্যায়ে মারধর করে তাকে দিয়ে ৩টি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে মর্মে সই করিয়ে নেন।
এরপর টাকা না দিতে পারায় তারা ২৫ ও ২৭ মার্চ তাকে পুণরায় আটক করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ঘটনায় উপজেলার যোগীপাড়া গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে মামলা করেন।
মামলায় বাগাতিপাড়া থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম, দুই উপ-পরিদর্শক রবিউল ইসলাম ও শাকিল আহমেদ, সহকারী উপ-পরিদর্শক আবদুল করিমের স্ত্রী অঞ্জনা বেগম ও তার বাসার তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাসারকে অভিযুক্ত করা হয়।
আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
আগামী ১৮ মে মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাজু আহমেদ মামলাটি দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাদীর আইনজীবী মসলেম উদ্দিন জানান, তার মক্কেল আসামিদের জুলুমের শিকার হয়েছেন বলে মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। পাওয়ার ট্রিলারের ভাড়ার ব্যাপারে তার কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর তিনি আপস-মীমাংসার চেষ্টা করেছিলেন। নিজাম উদ্দিনকে জুলুম করা বা তার কাছে টাকা দাবি করার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে জানান তিনি।
What's Your Reaction?